আজ ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আপনার বাচ্চা কানে শুনে তো? কথা বলতে দেরি হচ্ছে না তো?


জান্নাতের কোলে যখন অনেক প্রতীক্ষার পর আয়ান এলো তখন সবাই যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেল। নানাবাড়ি-দাদাবাড়িতে রাজপুত্রের মতো আদর-স্নেহ-ভালোবাসায় বড় হতে লাগল আহাদ। কিন্তু আহাদের স্বভাব কেমন যেন, বড় বেশি চুপচাপ। খাওয়া আর ঘুমানো ছাড়া খুব বেশি কিছুই করে না। অল্প অল্প অস্ফুট কিছু শব্দ করে। আস্তে আস্তে বড় হতে লাগল আহাদ। কথা বলার বয়স পেরিয়ে যেতে লাগল। অনেকে বলল, ও রকম কিছু কিছু বাচ্চা একটু দেরিতে কথা বলতে শেখে, চিন্তার কিছু নেই। অনেকে কানাঘুষা করতে লাগল, বাচ্চা বোবা হয়েছে কি না। কাজের চাপে নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া মাসুম সাহেব আর ম্যাটারনিটি লিভ শেষে কাজে ঢুকে জাঁতাকলে পড়া তিতলীর কপালে ভাঁজ পড়তে লাগল। একদিন তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে সাহস করে চলে গেলেন ডাক্তারের চেম্বারে। পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে দেখা গেল, আহাদের দুই কানেই শ্রবণশক্তি বেশ কম। ডাক্তার জানালেন, আরও আগেই তাঁদের আসা উচিত ছিল। যা-ই হোক, চিকিৎসা শুরু হলো ধাপে ধাপে।

ডাক্তারের কাছে নেওয়ার আগে কীভাবে বুঝতে পারবেন আপনার শিশুর কানে শোনার কোনো সমস্যা আছে কি না? মনোযোগ দিয়ে নিচের তথ্যগুলো শিশুর বয়সের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

যা করবেন:
১. জন্মের পরপর খেয়াল করুন, শিশু হঠাৎ কোনো বড় শব্দ শুনে চমকে যায় কি না। শব্দটি হতে পারে হাততালির বা দরজা বন্ধ করার। যদি এ ধরনের শব্দ শুনে বাচ্চা কেঁপে ওঠে বা অন্তত চোখের পলক ফেলে, তাহলে ধরে নিন জন্মের পরপর তার শ্রবণশক্তি ভালো আছে।

২. এক মাস বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে লক্ষ করুন, শিশু লম্বা সময় ধরে হওয়া যেকোনো শব্দের প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠছে কি না। শব্দগুলো হতে পারে ফ্যানের আওয়াজ, ভ্যাকুয়াম মেশিনের শব্দ, মোবাইলের একটানা রিংটোন ইত্যাদি। যদি শিশু এ ধরনের শব্দের প্রতি মনোযোগী হয় এবং স্থির হয়ে খেয়াল করতে থাকে, তাহলে বুঝবেন, শিশুর শ্রবণশক্তি স্বাভাবিক আছে।

৩. চার মাস বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে খেয়াল করুন, শিশু আপনার গলার স্বর শুনে কান্না থামায় কি না অথবা শান্ত হচ্ছে কি না। এ বয়সী শিশুরা আপনাকে না দেখে কান্না শুরু করলেও আপনার গলার স্বর শোনার পর শান্ত হবে। আপনার কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শব্দ কোন দিক থেকে আসছে, সেদিকে ঘাড় ঘোরানোর চেষ্টা করবে।

৪. সাত মাস বয়সী শিশু আপনার আওয়াজ শোনার সঙ্গে সঙ্গে আপনার দিকে ঘুরে তাকাবে। পাশাপাশি অন্য কিছুতে তার মনোযোগ আকৃষ্ট না হলে শান্ত ঘরে সে যেকোনো সামান্যতম শব্দ শুনলে সেদিকেই মনোযোগী হবে।

লেখক, ,__
ডা.মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ পাভেল।
এমবিবিএস (ঢাকা), বিসিএস(স্বাস্থ্য), এমপিএইচ (পাবলিক হেলথ),ডিএলও (ইএনটি)
(বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়)
নাক,কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন।
সহকারী সার্জন,
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ইএনটি (ইএনটি)(ex)ডিসিএমসি।

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...